Tuesday, March 19, 2019

(6) লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন কী ?



লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন কী ?

লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ । শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন সুস্থ লিভার। লিভারকে বলা হয় শরীরের পাওয়ার হাউস, যা জীবন-ধারণের জন্য অপরিহার্য। লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনে মানবদেহের অকার্যকর লিভার ফেলে নতুন লিভার প্রতিস্থাপন করা হয় ।


 লিভার ট্রান্সপ্লান্ট এর প্রয়োজন কোন ধরণের রোগীর হয়ে থাকে ?

খুব স্বল্পমেয়াদী অথবা দীর্ঘমেয়াদী লিভার রোগের কারনে কোন ব্যক্তির যদি লিভারের কার্য ক্ষমতা হারিয়ে যায় তাহলে সেই ব্যক্তির লিভার ট্রান্সপ্লান্ট বা প্রতিস্থাপনের কথা বিবেচনা করা হয়। লিভার ট্রান্সপ্লান্ট এর দরকার হয় যে সকল রোগের কারণে সেগুলি হলো - হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি ভাইরাস জনিত সিরোসিস, প্রাইমারি বিলিয়ারি সিরোসিস, প্রাইমারি স্কেরোজিং কোলেনজাইটিস, শিশুদের বিলিয়ারি আটরেসিয়া (পিত্তনালী শুকিয়ে যাওয়া), মেটাবোলিক ডিজঅর্ডার ইত্যাদি। এছাড়াও ভাইরাস ইনফেকশন অথবা মদ্যপানের কারণেও অনেক সময় লিভার ফেইলিওর হলেও ট্রান্সপ্লান্ট এর প্রয়োজন হতে পারে।


ট্রান্সপ্লান্ট এর জন্য লিভারের উৎস কি ?

সাধারণত দুটি উৎস থেকে দানকৃত লিভার নেওয়া হয়।
১) জীবিত ব্যক্তির দেহ থেকে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট(Deceased Donar Liver Transplant-DDLT):

এ ক্ষেত্রে একজন জীবিত সুস্থ ব্যক্তি লিভারের একটি অংশ(ডান অথবা বাম দিক)তার কোন নিকট আত্মীয় কে দান করতে পারেন।

২) মৃত ব্যক্তির দেহ থেকে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট(Deceased Donor Liver Transplant- DDLT):

এ ক্ষেত্রে লিভারটি একজন ব্রেইন ডেথ (জীবনরক্ষাকারী সহায়তা সমূহ সরিয়ে নেবার পর, রোগীর যখন আর বেঁচে থাকার সম্ভবনা থাকে না) সেই সময় ঘোষিত রোগীর দেহ থেকে অপসারন করা হয়।


জীবিত লিভার দাতা কে হতে পারবেন ?

যে কোন জীবিত ব্যক্তি তার লিভারের একটি অংশ দান করতে পারে। ১৮-৬৫ বছরের কোন সুস্থ ব্যক্তির রক্তের গ্রুপ যদি গ্রহিতার রক্তের গ্রুপের সাথে মিলে যায় তাহলে উনি তার লিভারের একটি অংশ ওই ব্যক্তিকে দান করতে পারবেন।দাতা হিসাবে কোন ব্যক্তির যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য লিভার ট্রান্সপ্লান্ট টিম, ওই ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং বিভিন্ন ল্যাবরেটরী টেস্ট করিয়ে থাকেন এবং এসব ক্ষেত্রে দাতার শারীরিক নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।


লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি কিভাবে করা হয় ?

দুটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অপারেশন থিয়েটারে অভিজ্ঞ দুইদল লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন কাজ করে। এই সময় লিভারের রক্ত সরাবরাহ যন্ত্রের সাহায্যে সেই রক্ত দেহের অন্যন্য অঙ্গে প্রভাবিত করা হয়। অপর দলটি দাতার দেহ থেকে সুস্থ লিভারের অংশ বিশেষ অপসারন করে তা প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করে থাকেন। এরপর দানকৃত লিভারের অংশ রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়।


 ট্রান্সপ্ল্যান্টের পর লিভার গ্রহীতার ক্ষেত্রে কি ঘটে ?

দান করার পর দাতার অবশিষ্ট লিভার তার দেহে পুনরায় বাড়তে থাকে। এটি ৬-১২ সপ্তাহের মধ্যে তার পূর্বের সম্পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পায় । প্রতিস্থাপিত লিভার গ্রহীতার দেহে অনুরূপভাবে দ্রুত বাড়তে থাকে। দেহের গুরুত্বপূর্ণ কার্য পরিচলনার জন্য, একটি নতুন অঙ্গের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে থাকে।

                                          ****THANKING YOU****
                                        MOHD AMINUR RAHAMAN

Sunday, March 17, 2019

(5) লিভার ভালো আছে কিনা জানার জন্য কোন কোন টেস্ট করা হয়?


             সুস্থ লিভার সুস্থ জীবন-5




লিভার বা যকৃতের ক্ষতির কারণ এবং মাত্রা  খুঁজে বের করা লিভারের চিকিত্সার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


আপনার ডাক্তার আপনার সম্পূর্ণ মেডিকেল হিস্ট্রি নেওয়ার পর এবং আপনাকে শারীরিক ভাবে পর্যবেক্ষণের পর আপনাকে নিন্ন লিখত টেস্ট গুলো করার সুপারিশ করতে পারেন:

(১) রক্ত পরীক্ষা: 
যকৃতের রোগ নির্ণয়ের জন্য লিভার ফাংশন পরীক্ষার নামে একটি রক্ত পরীক্ষার ব্যবহার করা যেতে পারে। নির্দিষ্ট লিভার সমস্যা বা জেনেটিক অবস্থার সন্ধানে অন্যান্য রক্ত পরীক্ষা করা যেতে পারে।

       লিভার ফাঙ্কশন টেস্ট এর মধ্যে নিন্ন                   লিখিত টেস্ট গুলো করা হয়:

      (a) অ্যালানাইন ট্রান্সমিনাস (ALT)
      (b)  এস্পার্তাত আমিনট্রান্সফারেসে (AST)
      (c)  অ্যালক্যালাইন ফসফাটেজ (ALP)
      (d)  এলবুমিন
      (e)  বিলিরুবিন





আপনার লিভার ফাংশন পরীক্ষা ফলাফল বিভিন্ন এনজাইম এবং প্রোটিনগুলির মাত্রা প্রতিফলিত করবে যা আপনার ডাক্তারের বিশেষভাবে চেক করা হবে।
1.     অ্যালানাইন অ্যামিনোট্রান্সফেরেস (এলটি, এসজিপিটি) এবং অ্যাসপারেট ফসফাটেস (এএসটি, এসজিওটি)
ALT সাধারণ স্তর: 5 থেকে 40 ইউনিট / লিটার
এএসটি সাধারণ স্তর: 8 থেকে 46 ইউনিট / লিটার (পুরুষ); 7 থেকে 34 ইউনিট / লিটার (মহিলা)
2.     এলবুমিন
সাধারণ স্তর: 3.5 থেকে 5 গ্রাম / 100 মিলি
3.     অ্যালক্যালাইন ফসফাটেস (আলক ফোস, অ্যালপ)
এএসপি সাধারণ স্তর: 13 থেকে 39 ইউনিট / লিটার
4.     বিলিরুবিন: আপনার ফলাফল দুটি ভিন্ন বিলিরুবিন স্তরের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে:
  • মোট বিলিরুবিন (টি। বিলি): স্বাভাবিক স্তর: 0.3 থেকে 1.9 মিগ্রা / 100 মিলি
  • সরাসরি বিলিরুবিন (ডি। বিলি):  সাধারণ স্তর: 0.4 মিগ্রা / 100 মিলিমিটার কম

5.     গামা-গ্লুটামিল স্থানান্তর (জিজিটি)
সাধারন স্তর: 9 থেকে 48 ইউনিট / লিটার

২) ইমেজিং পরীক্ষা:

(a) আল্ট্রাসাউন্ড
(b)  সিটি স্ক্যান, (c)  এম-আর-আই,

(d) ফাইব্রোস্ক্যান কি?


ফাইব্রোস্ক্যান লিভারের একটি পরীক্ষা যার দ্বারা লিভারে কোন ধরণের ফাইব্রোসিস তৈরি হলে সহজেই পরিমাপ করা যায়। লিভারের রুটিন পরীক্ষা হিসাবে অথবা লিভারের অন্যান্য পরীক্ষা যেমন-রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি বা বায়োপসি-র সাথে ফাইব্রোস্ক্যান করা যায়।

ফাইব্রোস্ক্যান পরীক্ষার ফলাফল: 

ফাইব্রোস্ক্যান পরীক্ষায় লিভারের ফাইব্রোসিস-এর পরিমাপ করতে চারটি stages হিসাবে প্রকাশ করা হয়-
• F0 means no scarring (কোন ফাইব্রোসিস নেই)
• F1 is mild fibrosis(অল্প পরিমাপে ফাইব্রোসিস আছে)
• F2 is moderate fibrosis (সহনীয় পর্যায়ে ফাইব্রোসিস বিদ্ধমান)
• F3 is severe fibrosis (অত্যন্তবেশি বা ঝুঁকিপূর্ণ ফাইব্রোসিস বিদ্ধমান)
• F4 is cirrhosis or advanced fibrosis (সিরোসিস বা অতিরিক্তমাত্রায় ফাইব্রোসিস বিদ্ধমান)।

ফাইব্রোস্ক্যান রিপোর্টের  Stage দেখে রোগির  Prognosis বুঝে পরবর্তী করণীয় ব্যবস্থাপনা সহজতর হয়।



(৩) টিস্যু এনালাইসিস:  


একটি লিভার বায়োপ্সি বেশিরভাগ সময় টিস্যু নমুনা বের করতে ত্বকের মাধ্যমে ঢেকে দীর্ঘ লম্বা সুই ব্যবহার করে সম্পন্ন করা হয়। তারপর একটি পরীক্ষাগার বিশ্লেষণ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রধানত লিভারের স্বাভাবিক স্বাস্থ এবং কোনো ক্যান্সার টিস্যু আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করা হয়. 

                                        ****THANKING YOU****

                                      MOHD AMINUR RAHAMAN

Thursday, March 14, 2019

(4) আপনি কিভাবে বুঝবেন লিভার নষ্ট হয়ে যাচ্ছেঃ




                                      সুস্থ লিভার সুস্থ জীবন-


লিভার  শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সুস্থ থাকতে লিভারের খেয়াল রাখতেই হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লিভার খারাপ হওয়ার কারণ হয় কিছু বদ অভ্যাস।


আপনি কিভাবে বুঝবেন লিভার নষ্ট হয়ে যাচ্ছেঃ

লিভার বা যকৃত আমাদের শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বাহির করে দেয় ।যার জন্য এই অঙ্গটিতে ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে। তাই লিভার ডিজিজ বা হেপাটাইটিস প্রতিরোধের জন্য লিভারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা জরুরী। লিভার কখন কিভাবে নষ্ট হয় তা জানতে পারলে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে বাঁচানো সম্ভব।আসুন জেনে নেওয়া যাক কখন আমাদের লিভার নষ্ট হয়।



) পেট ব্যথা ও ফুলে যাওয়াঃ
আমাদের পেটের উপরের দিকের ডানপাশে যকৃত বা লিভার অবস্থিত। শরীরের এই অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি হলে তা লিভার ড্যামেজের লক্ষণ।এটি পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেয় যা লিভার ফুলে যাওয়াকে নির্দেশ করে। এই রকম লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।

) পা ফুলে যাওয়াঃ
লিভার ড্যামেজে পা ফুলে যেতে পারে এবং এই সমস্যাটির বিষয়ে অনেকেই সচেতন থাকে না। যকৃত যদি ঠিক ভাবে বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বাহির করে দিতে না পারে তাহলে সেগুলো শরীরে জমতে থাকে এবং রক্ত প্রবাহকে বাঁধা দেয়। এই বিষাক্ত পদার্থ গুলো শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয় এবং এদের বেশিরভাগই জমা হয় পায়ে। এর ফলশ্রুতিতেই পা ফুলে যায়।

                                                                   ৩) ক্ষুধামন্দাঃ

লিভার সমস্যার প্রধান লক্ষণ হচ্ছে ক্ষুধা কমে যাওয়া। লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হলে দেহে টক্সিক উপাদানের সঞ্চয় হতে থাকে। যার ফলে ক্ষুধা কমে যায়। এছাড়াও এর ফলে ভিটামিন ও মিনারেলের শোষণ বাধাগ্রস্থ হয়। পরিণতিতে দুর্বলতা ও অবসাদগ্রস্থ হতে দেখা যায়।

) বিবর্ণ প্রস্রাবঃ
যকৃত যখন ঠিকভাবে কাজ করেনা তখন পিত্ত লবণের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। পিত্ত লবণকে ভাঙ্গার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমের অনুপস্থিতিই শরীরে পিত্ত রঞ্জকের উপস্থিতি দেখা যায়। যা মল-মুত্রের সাথে বের হয়ে যায়। এই রঞ্জকগুলো কিছুটা গাঢ় রঙের হয়। তাই মুত্রের বর্ণ হালকা হলুদ থেকে গাঢ় হলুদ বর্ণের হয়। এটি লিভার খারাপ হওয়ার একটি বিশেষ লক্ষণ।

) বমিঃ
লিভার নষ্টের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া। লিভাবের বিষাক্ততার জন্যই বদহজম ও পেটের সমস্যা হয়। যার ফলশ্রুতিতে ক্রমাগত বমি হয়। যদি কোন কিছু খাওয়ার বা পান করার সাথে সাথে বমি বমি ভাব হয় বা বমি হয় তাহলে তাকে বুঝতে হবে ডাক্তার দেখানো জরুরি।

) চোখের বিবর্ণতাঃ
জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হচ্ছে চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া। বিশেষ করে সকালে চোখের বিবর্ণতা দেখা গেলে তা লিভার নষ্টের লক্ষণ বুঝায়। তাই চোখের কোন পরিবর্তন গুরুত্ব সহকারে নেয়া প্রয়োজন। কারণ এর দ্বারা বোঝা যায় আপনার যকৃত ঠিকভাবে কাজ করছেনা।

লিভার সুস্থ রাখার জন্যশর্করা প্রোটিন ও ফ্যাট গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করুন । হেলথি খাবার পরিমিত পরিমানে খান ।  কোনো মেডিসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক হন।  এলকোহল গ্রহণের অভ্যাস  থাকলে এটাকে নিয়ন্ত্রন করুন। হেলথি লাইফ স্টাইল মেইনটেইন করুনপরিমিত পরিমানে ঘুমান,  হাটা-হাটি যোগ ব্যায়াম নিয়মিত করুন। আমাদের আগের ব্লগ এ লেখা লিভার সুস্থ রাখার খাবার গুলো বেশি বেশি পরিমানে খান।

Sunday, March 10, 2019

(3) লিভার ভালো রাখার কিছু উপায়





 সুস্থ লিভার সুস্থ জীবন-


 লিভার শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সুস্থ থাকতে লিভারের খেয়াল রাখতেই হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লিভার খারাপ হওয়ার কারণ হয় কিছু বদ অভ্যাস।  চলুন জেনে নেই লিভার ভালো রাখার কিছু উপায়


কোন কোন প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন?

ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণ:  

ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কারণ, উচ্চ রক্তচাপ লিভারের কার্যক্ষমতায় বাধা প্রদান করে।


২। ওজন নিয়ন্ত্রণ:  

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কারণ স্থূলতা লিভারে চর্বি জমতে সাহায্য করে। ফ্যাটি লিভারই এখন এ দেশে ক্রনিক লিভার ডিজিজের প্রধান কারণ। সূত্র: এভ্রিডে হেলথ। নিয়মিত ব্যায়াম করুণ। যেমন হাঁটাহাঁটি, সাতার কাটা ও যোগ ব্যায়াম ইত্যাদি।


৩ । শর্করা:  

শর্করা জাতীয় খাবার কম খান শর্করা জাতীয় খাদ্যের আধিক্য লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করে, তাই অধিক শর্করা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুণ। ডায়াবেটিক হলে লিভার মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

৪ । হেলদি ফ্যাট- 

ফ্যাট শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । তাই লিভার সুস্থ রাখতে ফ্যাট ডায়েট থেকে একেবারে বাদ দিয়ে দেবেন না। লিভার সুস্থ রাখার জন্য হেলথি ফ্যাট পরিমিত পরিমানে গ্রহণ করুন  অলিভ, ওয়ালনাট জাতীয় খাবারে হেলদি ফ্যাট থাকে।

৫ । প্লান্ট প্রোটিন- 

লিভার সুস্থ রাখতে সবচেয়ে বেশি জরুরি সঠিক খাবার বাছা। অ্যানিমাল প্রোটিনের থেকে লিভারের জন্য বেশি ভাল প্লান্ট প্রোটিন। ডাল, সবুজ শাক-সব্জি, বাদাম, ফাইবার খান।

৬। হার্বাল কেয়ার-

 শুনতে অদ্ভুত লাগলেও বেশ কিছু গাছের মূল রয়েছে যা লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ড্যানডেলিওন, মিল্ক থিসল বা হলুদের মূল লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।

কোন কোন অভ্যাস পরিহার করবেন?


। মদ্যপান:

মদ্যপান হতে বিরত থাকুন কারণ যেকোনো রোগীরই অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। অ্যালকোহল নিজেই অ্যালকোহলিক লিভার সিরোসিস তৈরি করতে পারে। অ্যালকোহল গ্রহণ করলে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসজনিত লিভার রোগের মাত্রাও অনেক বৃদ্ধি পায়। মদ্যপানের কারণে ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে। পাশাপাশি যাঁরা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাঁদের লিভারে ফোড়া হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।

২ । ওষুধ থেকে সাবধান:

বেশি কিছু ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে। এ সব ওষুধ থেকে দূরে থাকুন। কিছু পেনকিলার, যেমন টাইলেনল বা কোলেস্টেরলের ওষুধ লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে।

৩ । সাপ্লিমেন্ট:

প্রোটিন বা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। এমন সাপ্লিমেন্ট বাছুন যা লিভার ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি লিভার পরিষ্কার রাখে। প্রোটিনের মধ্যে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিডও লিভার পরিষ্কার রাখার জন্য ভাল। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।


এককথায় লিভার সুস্থ রাখার জন্য, শর্করা প্রোটিন ও ফ্যাট গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করুন।হেলথি খাবার পরিমিত পরিমানে খান।  কোনো মেডিসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক হন।  এলকোহল গ্রহণের অভ্যাস  থাকলে এটাকে নিয়ন্ত্রন করুন। হেলথি লাইফ স্টাইল মেইনটেইন করুন, পরিমিত পরিমানে ঘুমান,  হাটা-হাটি , যোগ ব্যায়াম নিয়মিত করুন। আমাদের আগের ব্লগ এ লেখা লিভার সুস্থ রাখার খাবার গুলো বেশি বেশি পরিমানে খান। 


Thursday, March 7, 2019

(2) লিভার সুস্থ রাখার পরিচিত কিছু শাক-সব্জি ও ফলমূল




                 সুস্থ লিভার সুস্থ জীবন

আমাদের দেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ লিভার। যার ওজন প্রায় তিন পাউন্ড। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা , হজমশক্তি এবং পুষ্টিধারণসহ আমাদের দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে এই লিভার । তাই দেহের সুস্থতার জন্য লিভারের সুস্থতা খুবই জরুরি । এটি রক্তনালী থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয় এবং খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন লিভারের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ, দীর্ঘ সময় ক্লান্তি অনুভব করা, হজমের সমস্যা, এলার্জি ইত্যাদি এই সমস্ত অসুখ দেখা দিতে পারে অসুস্থ লিভারের কারণে।



 তাই দেহ ও লিভার সুস্থ রাখার জন্য চিনে নিন এমন কিছু খাবার যা সুস্থ রাখবে আপনাকে-



1) পাতিলেবুর রস:

লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং ডি লিমনেন উপাদান লিভারে এনজাইম সক্রিয় করে। প্রতিদিন লেবুপানি পান করুন, চাইলে মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন


2) সবুজ শাক:

সবুজ শাকে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের দৈনন্দিন অন্যান্য খাবারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ এবং কীটনাশকের সামঞ্জস্যতা রক্ষা করে থাকে যা লিভারের জন্য বেশ উপকারী ।


3) শালগম:

মুলো জাতীয় শালগম শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত। এটি এক প্রকার রূপান্তরিত মূল এবং মাটির নিচের অংশ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, শালগমে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিজ ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে যা লিভারের সার্বিক কাজে সহায়তা করে থাকে


4) রসুনের কোয়া:

লিভার পরিষ্কার রাখার জন্য উত্তম খাবার হল রসুন। রসুনের এনজাইম লিভারের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান পরিষ্কার করে। প্রতিদিন যে কোন সময় ২/৩ টি রসুনের কোয়া খেয়ে নিন।



5) হলুদ:


মূল্যবান অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর হলুদ লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে হেপাটাইটিস বি এবং সি এর ভাইরাস নির্মূলেও এই হলুদ অত্যন্ত সহায়ক। শরীরে হজমে এবং পিত্তথলী পরিস্কার রাখতে সহায়তা করে হলুদ।


 6) আমলকী:

আমলকী হল আমাদের দেহের জন্য সব চাইতে উপকারী ভেষজের মধ্যে একটি। এটি আপনি প্রতি দিনই খেতে পারেন এবং এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। বরং আছে দারুণ সব উপকার। আমলকীর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। আমলকী লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং হজমে সহায়তা করে।


7) আপেল:

আপেল অতি পরিচিত একটি ফল। এটি বহু গুণে গুণান্বিত। আপেলের রয়েছে নানাবিধ পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা। আপেলের পেক্টিন, ফাইবার দেহের পরিপাক নালী হতে টক্সিন ও রক্ত হতে কোলেস্টরোল দূর করে এবং সাথে সাথে লিভারকেও সুস্থ রাখে। তাই লিভার সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ১ টি করে আপেল খান।


8) জাম্বুরা (বাতাবি লেবু):

জাম্বুরা ফলটি সরাসরি বা জুস করে খেলে তা ক্যান্সার উৎপাদক উপাদান এবং টক্সিন নির্মূলে লিভারকে সহায়তা করে থাকে। এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী।